মানসিক চাপ, উদ্বেগ,অশান্তি বা টেনশন
জন্তু জানোয়ারের কোন উদ্বেগ বা উৎকন্ঠা আছে কি না জানা নেই; হয়তো বিপজ্জনক কিছু সামনা সামনি এসে গেলে ভয় পায়, কিন্তু মানুষি একমাত্র জীব বোধহয় আগামী দিনের খারাপ কিছুর কথা ভেবে উদ্বেগ গ্রস্থ হয়।সব মানুষের এই উদ্বেগ বা টেনশন সমান নয়। কেউ কেউ বেশী উদ্বিগ্ন বা উৎকন্ঠায় থাকে,আর কেউ কম টেনশনে থাকে।তাই মনকে টেনশন-ফ্রি করার জন্য আমরা কত কি করে থাকি, যেমন যোগ ব্যয়াম করি,মেডিটেশন করি ইত্যাদি।
মানসিক চাপ বা উৎকন্ঠা সবসময় খারাপ তা কিন্তু নয়।যেমন কারও যদি পরীক্ষায় ফেল করার যদি কোনো ভয় না থাকে তবে সে পড়াশোনা ঠিক মতো করবে না, তাতে তার ফলও ভাল হবে না।আবার যদি খুব বেশী দুশ্চিন্তা থাকে পরীক্ষানিয়ে তাহলে পড়ায় মন বসাতে পারবে না, তাতে ফল ভাল হবে না।একটু টেনশনে সাধারনতঃ ভালই হয়।
কি কি কারনে মানসিক চাপ বা টেনশন হতে পারে?
দেখা গেছে যে মানুষের জীবনে সবচেয়ে বড় দুঃখের ঘটনা বা সবচেয়ে বেশী মানসিক চাপ সৃষ্টি করে-তা হলো স্বামী বা স্ত্রীর মৃত্যু।এছাড়া আরও অনেক কারন আছে যেমনঃবিবাহ বিচ্ছেদ, জেল খাটা, পরিবারের কোন ঘনিষ্টজনের মৃত্যু,চাকরি চলে যাওয়া বা অবসর নেওয়া,সন্তান গর্ভে আসা, কর্মক্ষেত্রে দায়িত্ব বাড়া,বাড়ীর লোকজনের সাথে অশান্তি, বাসস্থান বা স্কুল পাল্টানো,যৌন সমস্যা ইত্যাদি।
আপাত দৃষ্টিতে মনে হতে পারে কিছু ঘটনা বেশ ছোট বা মনে বিশেষ আঘাত পাবার মতো নয়, কিন্তু দেখা গেছে যে, কেউ কেউ এত ছোট ছোট সমস্যার মধ্যে দিয়ে গেছে যে, শেষ আঘাতটাই মনকে বিশেষ নাড়া দিয়ে মানসিক ভাবে অসুস্থ করে দিয়েছে।
মানসিক চাপ বা টেনশনের উপসর্গগুলি কি কি?
কেউ যদি টেনশনে বা উৎকন্ঠায় ভোগেন তবে তার ভাবসাব দেখলেই বেশ বোঝা যায়। যেমন---
১) কখনো স্বাভাবিক হতে পারে না, মনের মধ্যে একটা অস্থির ভাব।এক জায়গায় স্থির হয়ে থাকতে পারে না।
২)যে কোনো ব্যপারই হোক না কেন,সব সময় খারাপটা ভাবতে থাকে।
৩) দৈনন্দিন কাজে কোনো মন দিতে পারে না,দিলেও সব সময় মনে করে হয়ত কিছু ভুল হয়ে যাবে।
৪)কেউ কেউ আবার এত সতর্ক থাকে যে ভুল যাতে না হয় তার জন্য অনেক ভাবে চেক করে নিশ্চিন্ত হতে চেষ্টা করে।

৫)যারা সবসময় টেনশনে থাকে,তারা একটু আওয়াজেই চমকে ওঠে,কেউ একটু জোরে কথা বললেই তাদের মনে হয় কথাগুলো যেন মাথার মধ্যে যেন ঝন ঝন করে বাজছে।
৬)ঘুম আসতে দেরী হতে পারে নানা দুঃশ্চিন্তার জন্য,যদিও বা ঘুম আসে তাও মাঝরাতে বারে বারে ভেঙে যেতে পারে।সকালে ঘুম থেকে উঠে মনে হবে যেন সারারাত ঘুমই হয় নি।কেউ কেউ আবার খুব বাজে স্বপ্ন দেখতে পারে।যেমন কেউ তাকে তাড়া করছে মারবার জন্য, বা অনেক উচুঁ জায়গা থেকে নীচে পড়ে যাচ্ছে,ইত্যাদি।
৭)কারও কারও আবার নানারকম শারীরীক উপসর্গ দেখা যেতে পারে, যেমন—শারীরীক দুর্বলতা,খেতে ইছচা না করা, বা খাওয়ায় রুচি না থাকা,কেউ কেউ বলেন, সব সময় মাথা ব্যথা করছে বা মাথা ধরে আছে,মাথা ঘুরছে,বুক ধড় ফড় করছে, গা, হাত, পা ঝিন ঝিন করছে বা ব্যথা করছে, কোন কিছু মনে থাকছে না,কাজে বা পড়ায় মনোযোগ দিতে পারছে না। এর জন্য অনেক টেনশন রোগী ভাবে শারিরিক নার্ভের কিছু রোগ হয়েছে, তাই তারা অনেকে নার্ভের ডক্তার বা নিউরোলজিস্টের কাছে যান।আসলে তাদের মানসিক রোগের ডাক্তারের কাছেই যাওয়া দরকার।
৮)এছাড়া নানা যৌন সমস্যাও হতে পারে এই টেনশন থেকে,যেমন যৌন ইচ্ছা কমে যায়,যৌনক্রিয়া করতে ভাল না লাগা।
৯)কেউ কেউ আবার টেনশনের জন্য সব সময় রাগ রাগ ভাবে থাকে,মনের বিষন্নতাও হতে পারে।
১০)এই টেনশন ভাব দীর্ঘদিন চলতে থাকলে রোগীর নানা শারীরীক রোগও হতে পারে।উপরিউক্ত উপসর্গ গুলি সবার মধ্যে নাও থাকতে পারে।
সুত্রঃ ইন্টারনেট
Comments
Post a Comment